মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি
প্রিয় ভিজিটর আজকের আলোচনার বিষয় হলো মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি। বর্তমান সময়ে বাংলাদেশের অনেকেই মাছ চাষের উদ্যোগ নিচ্ছে কিন্তু মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেই। যদি মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি এই সম্পর্কে ধারণা না থাকে তবে মাছ চাষ করতে গেলে বিভিন্ন ক্ষেত্রে বাধা সৃষ্টি হতে পারে। তাই আপনাদের উচিত মাছ চাষ শুরু করার আগে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে ধারণা নেওয়া।
মাছ চাষের জন্য সর্বপ্রথম যেটি প্রয়োজন তা হচ্ছে নতুন পুকুর খনন অথবা বিদ্যমান পুকুরকে চাষের জন্য প্রস্তুতকরণ বা উপযোগীকরণ। মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি নিচে আলোচনা করা হলো-
মাছ চাষের জন্য নতুন পুকুর খনন
মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি মাধ্যমে আমরা জানতে পারবো সম্পূর্ণ মাছ ছাষের পদ্ধতি সম্পর্কে। কোনো স্থানে পুকুর খনন করতে হলে একটি আদর্শ পুকুরের যে বৈশিষ্ট্যগুলো থাকা দরকার যথাসম্ভব সেগুলো বজায় রেখে পুকুর খনন করতে হবে। পুকুর খননের সময় পুকুরটি যথাসম্ভব আয়তকার রাখার চেষ্টা করতে হবে। পুকুরের গভীরতা এমন ভাবে করা প্রয়োজন যেন সারা বছর ১.৫ থেকে ২ মিটার পানি থাকে। খননের সময় পুকুরের পাড়ের ঢাল ন্যূনতম ১. ৫ ঃ ২ রাখা উচিত। তবে মাটিতে বালির পরিমাণ বেশি হলে ১ ঃ ৩ করা নিরাপদ। অন্যথায় পুকুরের পাড় ভেঙে গিয়ে অল্প দিনে ব্যবহার অনুপযোগী হয়ে পড়বে। পুকুর খননের স্থানে যদি উপরের মাটি ভালো ও উর্বর হয় তবে পুকুর খননের সময় আলাদা করে সরিয়ে রাখতে হবে। পুকুর খনন শেষ হলে পুকুরের তলায় বালু মাটির উপরে তা বিছিয়ে দিতে হবে। এতে পুকুরের পানি ধারণ ক্ষমতা ও উৎপাদনশীলতা বৃদ্ধি পাবে। পুকুরের পাড়ের উপরিভাগে ২.৫ মিটার চওড়া হলে ভালো। পুকুরের উপরিতলের ধার ও পাড়ের মধ্যবর্তী কিছু স্থান ফাঁকা রাখা হয়। ঐ জায়গাটুকুকে বকচর বলে। পুকুরের তলা সমান অথচা একদিকে কিছুটা ঢালু করতে হবে। এতে পানি সেচ ও মাছ আহরণে সুবিধা হবে। নতুন পুকুর খননের পর দরমুজ দিয়ে পিটিয়ে পাড়ের মাটি শক্ত করে দিতে হবেে এবং পাড়ে ঘাস লাগিয়ে গিতে হবে। এতে করে পাড় ভেঙে যাওয়ার প্রবণতা কমে যাবে ও বর্ষায় পাড়ের মাটি ক্ষয়ে যাবে না।
পুকুর প্রস্তুতকরণ বা মাছ চাষের উপযোগীকরণ
পুকুর প্রস্তুতি মাছ চাষের জন্য খুব গুরুত্বপূর্ণ। মাছ পালনের পূর্বে বিদ্যমান পুকুর সংস্কারের মাধ্যমে ভালোভাবে প্রস্তুত করে নিলে মাছ স্বাস্থ্যসম্মত বসবাসের অনুকূল পরিবেশ পায়। এতে মাছের দ্রুত দৈহিক বৃদ্ধি ঘটে ও রোগ বালাই কম হয়। ফলে মাছ উৎপাদন লাভজনক হয়। পুকুর প্রস্তুতির প্রক্রিয়াটি কয়েকটি ধারাবাহিক ধাপে সম্পন্ন করতে হয়। ধাপগুলো পর্যায় ক্রমে আলোচনা করা হলো।
মাছ চাষের জন্য পুকুরের পাড় ও তলদেশ মেরামত
পুকুরের পাড় ভাঙা থাকলে অতিরিক্ত বৃষ্টিতে বা বর্ষাকালে বন্যায় মাছ ভেসে যেতে পারে বা রাক্ষুসে মাছ ঢুকতে পারে। তাই পাড় ভাঙা থাকলে মেরামত করতে হবে ও পাড় উঁচু করে বাঁধতে হবে। পাড়ে বড় গাছপালা থাকা উচিত নয় বা থাকলেও তা ছেটে দিতে হবে। এতে করে পুকুরে সূর্যের আলো পড়বে এবং পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হবে। পুকুর পুরানো হলে তলায় অতিরিক্ত কাদা জমা হয়। এ অবস্থায় ২০-২৫ সেমি কাদা রেখে অতিরিক্ত কাদা তুলে ফেলতে হবে। পুকুর শুকিয়ে সহজেই তা করা যায়। মাছ চাষের পুকুরে ৩-৪ বছর পর পর একবার শুকানো উচিত। পুকুর শুকানোর পর কড়া রোদে তলায় ফাটল ধরাতে হবে। সম্ভব হলে পুকুরের তলায় চাষ দিয়ে নিতে হবে। এতে করে পুকুরের তলা থেকে বিষাক্ত গ্যাস, ক্ষতিকর ব্যাকটেরিয়া ও পোকামাকড় দূর হবে এবং পুকুরের পরিবেশ ভালো থাকবে। এরপর পুকুরের তলদেশ সমান করে নিতে হবে। পুকুরের তলায় একদিকে কিছুটা ঢালু হলে ভালো হয়। এতে মাছ ধরতে ও জাল টানতে সুবিধা হবে।
পুকুরের জলজ আগাছা দমন পদ্ধতি
পুকুর পাড়ে ও ভিতরে বিভিন্ন আগাছ-কচুরিপানা, খুদিপানা, হেলেঞ্চা, কলমি, লতা, শেওলা ইত্যাদি থাকলে তা ভালোভাবে পরিষ্কার করে ফেলতে হবে। আগাছা পুকুরে দেওয়া সার শোষণ করে নেয়, সূর্যের আলো পড়তে বাধা দেয় এবং মাছের স্বাভাবিক চলাচলে বাধা দেয়। আগাছার মধ্যে মাছের শত্রু যেমন- রাক্ষুসে মাছ, সাপ, ব্যাঙ ইত্যাদি ব্যবহার করেও জলজ আগাছ দমন করা যায়। তবে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করা কাঙিক্ষত নয়। গ্রাসকার্প, সরপুঁটি, উদ্ভিদভোজী মাছ। চাষকালীন সময়ে পুকুরে এসব মাছ ছেড়ে জৈবিক পদ্ধতিতেও আগাছ নিয়ন্ত্রণ করা যায়।
রাক্ষুসে ও অচাষযোগ্য মাছ দূরীকরণ পদ্ধতি
বিভিন্ন রাক্ষুসে মাছ যেমন-শোল, বোয়াল, চিতল, ফলি, টাকি, গজার ইত্যাদি সরাসরি চাষের মাছ খেয়ে ফেলে। এছাড়া পুঁটি, পাপিলা, চান্দা ইত্যাদি অচাষযোগ্য মাছ। এরা চাষযোগ্য মাছের জায়গা, খাদ্য, অক্সিজেন সবকিছুতেই ভাগ বসায়। এর ফলে চাষকৃত মাছের উৎপাদন কমে যায়। নিচের যে কোনো পদ্ধতিতে রাক্ষুসে ও অবাদযোগ্য নয় এমন মাছ দূর করা যায়-
- পুকুর শুকিয়ে: পুকুরের পানি শুকিয়ে সব মাছ ধরে ফেলা যায়। অনেক মাছ পুকুরের তলায় কাদায় লুকিয়ে থাকতে পারে। তাই কড়া রোদে পুকুর শুকিয়ে ফেলতে হবে।
- জাল টেনে: পুকুরে পানি কম থাকলে বার বার জাল টেনে মাছ ধরে ফেলা যায়।
- মাছ মারার বিষ ব্যবহার করে: এক্ষেত্রে রোটেনন বা মহুয়ার খৈল ব্যবহার করা যায়। এসব দ্রব্য পুকুরে দিলে মাছের ফুলকার ছিদ্র বন্ধ করে দেয়। ফলে মাছ দম বন্ধ হয়ে মারা যায়। পুকুরে ১ ফুট বা ৩০ সেমি গভীরতায় পানির জন্য শতক প্রতি ৩০-৩৫ গ্রাম রোটেনন অথবা ৩ কেজি মহুয়ার খৈল ব্যবহার করতে হবে। েএজন্য মোট পরিমাণকে তিন ভাগে করতে হবে। একভাগ দিয়ে কাই তৈরি করে ছোট ছোট বল বানিয়ে পুকুরের বিভিন্ন স্থানে দিতে হবে। বাকি ২ ভাগ পানিতে গুলিয়ে পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হবে। এরপর জাল টেনে পুকুরের পানি উলটা-পালটা করে দিতে হবে। মাছ ভাসতে শুরু করলে জাল টেনে ধরে ফেলতে হবে। বিষ দেওয়ার পর ৭-১০ দিন পুকুরের পানি ব্যবহার করা যাবে না ও নতুন মাছ ছড়া যাবে না। রোটেনন ব্যবহারে মৃত মাছ খাওয়া যাবে। পুকুরে বিভিন্ন রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করেও মাছ মারা যায় যেমন- ফসটক্সিন ট্যাবলেট। তবে রাসায়নিক দ্রব্য ব্যবহার করে মাছ মারা ঠিক নয়।
পুকুরে চুন প্রয়োগ
পুকুর শুকানোর পরে তলায় চুন ছিটিয়ে দিতে হবে। পুকুরের তলায় চাষ দেওয়া হলে চাষের দিন চুন দিতে হবে। পুকুরে পানি থাকলে অ্যালুমিনিয়ামের বালতি বা ড্রামে চুন গুলার পর ঠান্ডা হলে সমস্ত পুকুরে ছিটিয়ে দিতে হয়।
পুকুরে সার প্রয়োগ
সার প্রয়োগের ফলে পানিতে মাছের প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয়। মাছের প্রধান প্রাকৃতিক খাবার হচ্ছে ফাইটোপ্লাংকটন ও জু-প্লাংকটন। সার প্রয়োগের ফলে পানিতে বিভিন্ন পুষ্টি উপাদান যেমন-ফসফরাস, পটাশিয়াম পানিতে মিশে। এ পুষ্টি উপাদান ব্যবহার করে পানিতে ফাইটোপ্লাংকটন তৈরি হয়। আর ফাইটোপ্লাংকটনের উপর নির্ভর করে জু-প্লাংকটন তৈরি হয়। সার দুই প্রকার (ক) জৈ সার, মেযন- গোবর, হাঁস-মুরগির বিষ্ঠা, (খ) অজৈব সার, যেমন-ইউরিয়া, টিএসপি, এমওপি ইত্যাদি। চুন প্রয়োগের ৫-৭ দিন পর সার প্রয়োগ করতে হয়। রোদ্রোজ্জ্বল দিনে সকাল থেকে দুপুরের মধ্যে পুকুরে সার প্রয়োগ করা উচিত। সার পানিতে গুলো সমস্ত পুকুরে সমানভাবে ছিটিয়ে দিতে হবে।
পুকুরের প্রাকৃতিক খাদ্য পরীক্ষা
- পুকুরে পোনা মজুদের পূর্বেই সার প্রয়োগের ৫-৬ দিন পর পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য তৈরি হয়েছি কিনা তা পরীক্ষা করে দেখতে হবে। কয়েকটি পদ্ধতিতে এটি করা যায়।
- সেক্কিডিস্ক: ২০ সেমি ব্যাসযুক্ত টিনের একটি সাদা-কালো থালা (একে সেক্কিডিস্ক বলে) সুতা দ্বারা পানিতে ডুবানোর পর যদি ২৫-৩০ সেমি গভীরতায় থালা দেখা না যায় তবে বুঝতে হবে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য রয়েছে। যদি ৩০ সেমি এর অধিক গভীরতায় সেক্কিডিস্ক দেখা যায় তবে বুজতে হবে খাবার অনেক কম।
- হাত পরীক্ষা: পানিতে হাতের কনুই পর্যন্ত ডুবিয়ে যদি হাতের তালু দেখা না যায় তবে বুঝতে হবে খাদ্য পরিমাণ মতো তৈরি হয়েছে।
- গ্লাস পরীক্ষা: একটি স্বচ্ছ কাচের গ্লাস দ্বারা পুকুরের পানি নিয়ে সূর্যের আলোর দিকে ধরলে যদি পানির রং সবুজ বা বাদামি সবুজ দেখা যায় এবং পানিতে অসংখ্য সুক্ষ্ম কণা ও ছোট পোকার মতো দেখা যায় তবে বুঝতে হবে পুকুরে প্রাকৃতিক খাদ্য পরিমাণ মতো তৈরি হয়েছে।
- পরীক্ষা করার পরও যদি দেখা যায় খাদ্য তৈরি হয়নি তবে আরও ২-৪ দিন অপেক্ষা করতে হবে। এরপর খাদ্য তৈরি না হলে পুনরায় সার প্রয়োগ করতে হবে।
পুকুরে পানির বিষাক্ততা পরীক্ষা
যে পুকুরে রাসায়নিক বিষ ব্যবহার করে মাছ মারা হয়েছে সেখানে পোনা মজুদের ১ দিন পূর্বে পুকুরে হাপা স্থাপন করে অথবা বালতিতে বা পাতিলে পুকুরের পানি নিয়ে তাতে ১০-১৫টি পোনা ছেড়ে ২৪ ঘণ্টা পর্যন্ত রাখতে হবে। এসময়ে পোনা মারা না গেলে বোঝা যাবে পুকুরের পানিতে কোনো বিষক্রিয়া নেই। তখন পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে।
পুকুরে মাছের পোনা ছাড়ার পদ্ধতি
পুকুরে পোনা ছাড়ার জন্য নিকটবর্তী কোনো সরকারি বা বেসরকারি হ্যাচারি বা নার্সারি খামার থেকে পোনা সংগ্রহ করা যেতে পারে। কাছাকাছি স্থানে মাটির হাঁড়ি বা অ্যালুমিনিয়ামের পাত্রে পোনা পরিবহন করা যেতে পারে। কিন্তু দূরবর্তী স্থানের ক্ষেত্রে পলিথিন ব্যাগে অক্সিজেন দিয়ে পোনা পরিবহন করা উচিত। এক্ষেত্রে পলিথিন ব্যাগে ৩ ভাগে ১ ভাগ পানি ও ২ ভাগ অক্সিজেন দিয়ে পোনা পরিবহন করতে হবে। পোনা সরাসরি পুকুরে ছাড়া উচিত নয়। পোনা ছাড়ার পূর্বে পোনাকে পুকুরের পানির সাথে খাপ খাইয়ে নিতে হবে। এ জন্য পোনাভর্তি পলিব্যাগ বা পাত্র পুকুরের পানিতে ১৫-২০ মিনিট ভাসিয়ে রাখতে হবে। এ সময় অল্প অল্প করে পলিথিনে বা পাত্রে পুকুরের পানি মেশাতে হবে। এতে করে পাত্রের পানির তাপমাত্রা ও পুকুরের পানির তাপমাত্রা প্রায় সমান হবে। এরপর পলিব্যাগ বা পাত্র কাত করে আস্তে আসত্ েএর ভিতরে পুকুরের পানি ঠেউ দিলে পোনা ধীরে ধীরে পুকুরে চলে যাবে। সকালে বা বিকালে বা দিনের ঠান্ডা আবহাওয়ায় পুকুরে পোনা ছাড়তে হবে। পোনা ছাড়ার পূর্বে শোধন করে নিলে পোনাগুলো কোনো ক্ষতিকারক পরজীবী দ্বারা আক্রান্ত থাকলে তা থেকে মুক্ত হবে, রোগান্ত্রান্ত হওয়ার সম্ভাবনা কম হবে ও মৃত্যুর ঝুঁকি কমে যাবে। বালতিতে বা পাতিলে ১০ লিটার পানিতে ১ চা চামচ পটাশিয়াম পারম্যাঙ্গানেট বা ২০০ গ্রাম লবণ বিশিয়ে তাতে প্রতিবারে ৩০০-৫০০ টি পোনা আধা মিনিট গোছল করাতে হবে। একবার তৈরিকৃত মিশ্রণে ৪-৫ বার শোধন করা যাবে। তাই পুকুরের জায়গা অনুযায়ী নির্দিষ্ট পরিমাণে পোনা ছাড়তে হবে।
লেখকের শেষ কথা
মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে এই ব্লগের মাধ্যমে সম্পূর্ণ আলোচনা করার চেষ্টা করেছি। আশা করছি আপনি আমাদের পোস্ট থেকে মাছ চাষের জন্য পুকুর খনন এবং প্রস্তুতকরণ পদ্ধতি সম্পর্কে জানতে পেরেছেন।
আমাদের সাথে থাকার জন্য আপনাকে ধন্যবাদ। আপনি যদি। এই ধরনের বিভিন্ন তথ্য জানতে চান তবে আপনাকে আমাদের ওয়েব সাইট নিয়মিত ভিজিট করতে হবে।